গুগলের জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার ক্রোম কিনে নিতে চায় ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, সার্চ বাজারে গুগলের একচেটিয়া দখল ভাঙতে এটি হতে পারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনে গুগলের বিরুদ্ধে চলমান অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার শুনানিতে ওপেনএআই-এর প্রধান পণ্য কর্মকর্তা নিক টার্লি এ বিষয়ে তাদের আগ্রহের কথা জানান। তিনি বলেন, যদি গুগলকে আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে ক্রোম বিক্রি করতে হয়, তবে ওপেনএআই সেটি কেনার জন্য প্রস্তুত।
টার্লির মতে, গুগলের সার্চ ও বিজ্ঞাপন বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) উন্নয়নে নয়, বরং পুরো ইন্টারনেট ইকোসিস্টেমেই একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওপেনএআই মনে করে, ক্রোমের মতো একটি শক্তিশালী ব্রাউজার অধিগ্রহণ করে তারা নতুন ধরনের AI-চালিত সার্চ অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারবে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও কার্যকর হবে।
বর্তমানে চ্যাটজিপিটি নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সার্চ প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়, কিন্তু এখনো প্রায় ৮০ শতাংশ অনুসন্ধান প্রশ্নে তাদের নিজস্ব মডেল পর্যাপ্ত নয় বলে স্বীকার করেন টার্লি। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ওপেনএআই গুগলের সার্চ API ব্যবহারের অনুরোধ করেছিল, কিন্তু আগস্টেই গুগল সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।
বর্তমানে চ্যাটজিপিটি মাইক্রোসফট বিং-এর ওপর নির্ভর করে তথ্য আহরণের জন্য। তবে ওপেনএআই মনে করে, গুগলের মতো বৃহৎ প্ল্যাটফর্মের তথ্য ও অবকাঠামোতে প্রবেশাধিকার না পাওয়া পর্যন্ত AI ও সার্চ সেক্টরে সুষম প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়।
মার্কিন বিচার বিভাগের অভিযোগ অনুযায়ী, গুগল মোবাইল নির্মাতাদের সঙ্গে এমন কিছু চুক্তি করেছে যার ফলে তাদের সার্চ, ক্রোম এবং জেমিনি AI অ্যাপ নতুন ডিভাইসে ডিফল্ট হিসেবে থাকে। সরকারি আইনজীবীরা একে প্রতিযোগিতাবিরোধী আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিচারক অমিত মেহতা উল্লেখ করেছেন, এসব চুক্তি প্রযুক্তি বাজারে অন্যদের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে এবং গুগলের AI পণ্যগুলোকেও অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
টার্লি বলেন, “আমরা একটি উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক সার্চ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে চাই। আর তা করতে হলে গুগলের আধিপত্য কমাতে হবে।”
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.