চ্যাটজিপিটিতে ১৫ কমান্ডে কতটুকু পানি খরচ হয়?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন সহজ করছে, তেমনি এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। বিশেষ করে চ্যাটজিপিটির মতো AI চ্যাটবট ব্যবহার করতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ও পানি খরচ হয়, তা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই প্রসঙ্গে এবার সরাসরি কথা বললেন ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান।

এক ব্লগ পোস্টে অল্টম্যান জানান, চ্যাটজিপিটিতে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গড়ে প্রায় ০.০০০০৮৫ গ্যালন পানি খরচ হয়—যা একটি চা চামচের মাত্র ১৫ ভাগের ১ ভাগ। অর্থাৎ, আপনি যদি ১৫টি প্রশ্ন করেন, তা হলে মোট পানির ব্যবহার হবে একটি পূর্ণ চা চামচের সমান।

যদিও এই পরিমাণ শুনতে সামান্য লাগে, তবে প্রতিদিন কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এই ছোট সংখ্যাই রূপ নেয় বিপুল পানি খরচে।

শুধু পানি নয়, প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে প্রায় ০.৩৪ ওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ লাগে। তুলনামূলকভাবে, এটি একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনের এক সেকেন্ডের ব্যবহার বা একটি শক্তি সাশ্রয়ী বাল্বের দুই মিনিটের ব্যবহারের সমান।

স্যাম অল্টম্যান সতর্ক করে বলেছেন, ভবিষ্যতে AI প্রযুক্তির বিদ্যুৎ চাহিদা এতটাই বাড়তে পারে যে এটি একটি সাধারণ পরিবারের মাসিক বিদ্যুৎ বিলের সমান হতে পারে।

চ্যাটজিপিটির মতো AI সেবাগুলোর মূল ভিত্তি হলো বড় ডেটা সেন্টার ও সার্ভার ফার্ম। এসব সার্ভার চালু রাখতে ও শীতল রাখতে প্রয়োজন হয় বিপুল বিদ্যুৎ ও পানি। পানির ব্যবহার হয় মূলত সার্ভারের কুলিং সিস্টেমে, যাতে অতিরিক্ত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্ভার যত বেশি শক্তিশালী হয়, তত বেশি তাপ উৎপন্ন করে। সেই তাপ কমাতে প্রয়োজন হয় আরও বেশি পানি ও বিদ্যুৎ। তাই চ্যাটজিপিটিসহ অন্যান্য এআই টুল যত বেশি জনপ্রিয় হবে, পরিবেশের ওপর চাপ তত বাড়বে।

গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এআই প্রযুক্তির বিদ্যুৎ ব্যবহার বিটকয়েন মাইনিংয়ের চেয়েও বেশি হতে পারে। উল্লেখ্য, বিটকয়েন মাইনিং ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের একটি বড় অংশ দখল করে আছে।

যদিও অল্টম্যান এই খরচের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন, তবে এখন পর্যন্ত ওপেনএআই এ বিষয়ে বিস্তারিত সূত্র বা গণনাপদ্ধতি প্রকাশ করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, পরিবেশগত সমালোচনার জবাব দিতে এবং প্রযুক্তির জবাবদিহিতা বোঝাতে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।