অনলাইনে পণ্যের মিথ্যা পর্যালোচনা বা ভুয়া রিভিউ প্রতিরোধে কঠোর নীতি বাস্তবায়ন করছে গুগল। ভুয়া রিভিউ ব্যবহার করে ব্যবসার সুনাম বাড়ানোর চেষ্টায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে গুগল। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি (সিএমএ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সিএমএ জানিয়েছে, গুগল ভুয়া রিভিউ শনাক্ত ও দ্রুত অপসারণে উন্নত প্রযুক্তি ও কৌশল প্রয়োগ করবে। যারা ব্যবসার রেটিং বাড়াতে ভুয়া রিভিউ ব্যবহার করবে, তাদের সব রিভিউ মুছে ফেলা হবে এবং ভবিষ্যতে রিভিউ দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু যুক্তরাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি গুগলের অন্যান্য সেবা ও প্ল্যাটফর্মেও কার্যকর থাকবে।
যেসব প্রতিষ্ঠান ভুয়া রিভিউ ব্যবহার করে নিজেদের সুনাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর চেষ্টা করবে, তাদের প্রোফাইলে সতর্কবার্তা যুক্ত করা হবে। একইসঙ্গে নতুন রিভিউ দেওয়ার সুযোগও বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি এসব প্রতিষ্ঠান পুনরায় একই কাজ করে, তবে ছয় মাস বা তারও বেশি সময়ের রিভিউ মুছে ফেলা হবে।
গুগল জানিয়েছে, গ্রাহকেরা ভুয়া রিভিউ নিয়ে সহজে অভিযোগ জানানোর জন্য নতুন একটি পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এতে আর্থিক প্রলোভন বা অন্য কোনো প্রভাবের মাধ্যমে রিভিউ নেওয়ার ঘটনাও প্রতিবেদন করা যাবে।
গুগলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভুয়া কনটেন্ট দমনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ফলে প্রতিবছর লক্ষাধিক ভুয়া রিভিউ প্রকাশের আগেই প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে গুগলের সমন্বিত কাজ চলমান রয়েছে।
সিএমএর প্রধান নির্বাহী সারাহ কারডেল বলেন, “গুগলের নতুন নীতিমালা ভুয়া রিভিউ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি ক্রেতাদের আস্থাশীল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে এবং সৎ ব্যবসাগুলোর জন্য ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করবে।”
সিএমএ বর্তমানে অ্যামাজনের বিরুদ্ধেও ভুয়া রিভিউ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। ২০২১ সালে গুগল ও অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। করোনা মহামারির সময়ে অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা বাড়ায় ভুয়া রিভিউর সমস্যা তীব্র হয়, যা সিএমএর নজরে আসে।
ভুয়া রিভিউ দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে একটি বড় সমস্যা। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ভুয়া রিভিউ কেনাবেচার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং জড়িতদের জরিমানা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুয়া রিভিউ সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং নীতিনির্ধারক সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.