কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য এবার চ্যালেঞ্জের মুখে। চীনের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো একে একে নিজেদের নতুন এআই মডেল উন্মুক্ত করে, মার্কিন বাজারকে টক্কর দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে, চীনের ডিপসিকের তৈরি ‘ডিপসিক এআই’ মডেলটি বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে। বাজার বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, ডিপসিক এআই ইতিমধ্যে চ্যাটজিপিটি, জেমিনি এবং ক্লডের মতো জনপ্রিয় মডেলগুলোকে পেছনে ফেলেছে।
এই উত্তেজনার মাঝেই, চীনের বেইজিংভিত্তিক স্টার্টআপ মুনশটের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল ‘কিমি কে-১.৫’ এবং আলিবাবার নতুন মডেল ‘কুয়েন-২.৫ ম্যাক্স’ বাজারে এসেছে। আলিবাবার দাবি, তাদের নতুন মডেলটি ডিপসিক ভি৩ মডেলের থেকেও অধিক শক্তিশালী। চীনের বৃহত্তম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা, প্রথাগত আনুষ্ঠানিকতা অগ্রাহ্য করে বসন্ত উৎসবের প্রথম দিনেই এটি উন্মুক্ত করেছে—যদিও সাধারণত এই সময় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে এবং কর্মীরা ছুটিতে থাকে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডিপসিক মডেলের দ্রুত উত্থান শুধু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের জন্য নয়, বরং চীনের অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই কারণে, ছুটির দিনেও আলিবাবা তাদের নতুন মডেল উন্মুক্ত করেছে।
আলিবাবার ক্লাউড বিভাগ জানিয়েছে, কুয়েন ২.৫ ম্যাক্স প্রায় সব ক্ষেত্রে ওপেনএআইয়ের জিপিটি-৪, ডিপসিক ভি৩, এবং মেটার লামা-৩.১-৪০৫বি এর তুলনায় অনেক উন্নত। এই মডেলগুলোর কম খরচে উচ্চ ক্ষমতা চীনা প্রযুক্তি–দুনিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পাশাপাশি, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর কম খরচে এআই মডেল তৈরির কৌশল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এআই কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের যৌক্তিকতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
অনেকে মনে করছেন, ডিপসিক এবং অন্যান্য চীনা প্রতিষ্ঠানের নতুন মডেলগুলো উন্মুক্ত হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের উন্নত সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানি বন্ধ করে, এআই খাতে চীনের উত্থান ঠেকাতে চায়—আর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো সেই চাপের মধ্যে দিয়ে নিজেদের মডেল বাজারে এনে বড় ধরনের চমক সৃষ্টি করছে।
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.