বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েডের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলেও একসময় এই অবস্থানে মাইক্রোসফট থাকতে পারত বলে মত দেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েডের সহপ্রতিষ্ঠাতা রিচ মাইনার দাবি করেছেন, মাইক্রোসফটের একচেটিয়া প্রভাব ঠেকাতেই অ্যান্ড্রয়েড তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
এক পোস্টে তিনি লেখেন, “মাইক্রোসফট যেন পারসোনাল কম্পিউটারের মতো মোবাইল খাতেও আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে, সেজন্যই আমি অ্যান্ড্রয়েড তৈরি করি। তারা উদ্ভাবনের পথ বন্ধ করে দিতে পারত। তাই যখন বিল গেটসের মুখে মোবাইল খাত নিয়ে আক্ষেপ শুনি, তা বেশ মজার মনে হয়।”
উল্লেখ্য, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এর আগেও মোবাইল খাতে সঠিক সময়ে প্রবেশ করতে না পারার বিষয়টি তাঁর জীবনের অন্যতম বড় ভুল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছেন, এই ভুলের কারণে মাইক্রোসফট প্রায় ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বাজারমূল্য হারিয়েছে।
২০০২ সালে রিচ মাইনার অরেঞ্জ এবং এইচটিসির সঙ্গে কাজ করে প্রথম উইন্ডোজভিত্তিক স্মার্টফোন ‘অরেঞ্জ এসপিভি’ তৈরি করেন। পরে মাইক্রোসফট নিজস্ব মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ফোন নিয়ে কাজ শুরু করে। সেসময় ধারণা করা হচ্ছিল, এটি অ্যাপলের আইফোনের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তবে গুগলের সঙ্গে মাইনারের দূরদর্শী পরিকল্পনা সেই হিসাব পুরোপুরি বদলে দেয়।
২০১০ সালের পর অ্যান্ড্রয়েড দ্রুত বাজার দখল করতে শুরু করে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। অ্যাপলের আইওএস দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মাইক্রোসফট যদি রিচ মাইনারের সঙ্গে অংশীদারত্ব করত বা অ্যান্ড্রয়েড অধিগ্রহণ করত, স্মার্টফোন বাজারে তাদের অবস্থান আজ ভিন্ন হতে পারত। উইন্ডোজ ফোনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় মাইক্রোসফট এবং তাদের অংশীদার নকিয়া বাজার থেকে পিছিয়ে পড়ে।
নকিয়া লুমিয়া সিরিজের মাধ্যমে কিছুটা সফলতা পাওয়া গেলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০১৪ সালে মাইক্রোসফট নকিয়ার সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে নকিয়া ব্র্যান্ডের ফিচার ফোন উৎপাদন করছে ফিনল্যান্ডের এইচএমডি গ্লোবাল। তবে স্মার্টফোন বাজারে নকিয়া নিজস্ব ব্র্যান্ড ব্যবহার করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.