দেশজুড়ে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। শুধু বাইরের আবহাওয়া নয়, অনেকের ঘরের ভেতরেও বেড়েছে অসহনীয় তাপমাত্রা। বিশেষ করে যেসব বাড়ির ছাদে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, সেসব ঘর যেন রীতিমতো ওভেনে পরিণত হয়। তবে এই সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সামনে আনছেন নতুন এক প্রযুক্তি— ‘কুল রুফ টেকনোলজি’।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুল রুফ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। এ প্রযুক্তিতে এমন উপাদান ব্যবহার করা হয় যা সূর্যের আলো শোষণ না করে প্রতিফলিত করে দেয়। ফলে ছাদ গরম হয় না এবং তার প্রভাবে ঘরের ভেতরও ঠাণ্ডা থাকে।
এই প্রযুক্তিতে ছাদে বিশেষ ধরনের শিংগ্লেস বা টাইলস বসানো হয়, যেগুলো সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিসহ বেশিরভাগ আলো প্রতিফলিত করতে সক্ষম। এ উপাদানগুলো তাপ খুব কম শোষণ করে এবং যেটুকু শোষণ করে, তা দ্রুত বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে দেয়। ফলে বাড়ির ছাদ ও ভেতরের অংশ অনেকটাই ঠাণ্ডা থাকে।
ছাদের তাপমাত্রা কম থাকার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বাড়ির ভেতর এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, পাশাপাশি কমে আসে এসির ব্যবহারজনিত পরিবেশ দূষণ।
কুল রুফ প্রযুক্তিতে বিভিন্ন ধরনের তাপ প্রতিফলক উপাদান ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
এই উপকরণগুলো শুধু রোদের তাপই প্রতিফলিত করে না, বরং তাপ নিরোধক হিসেবেও কাজ করে। ফলে দেয়ালে তাপ পৌঁছায় না, এবং ঘরের ভেতর দীর্ঘ সময় ধরে ঠাণ্ডা পরিবেশ বজায় থাকে।
পরিবেশবিদদের মতে, কুল রুফ প্রযুক্তি শুধু আরামদায়কই নয়, বরং পরিবেশের জন্যও ইতিবাচক। এসির মতো এটি কার্বন নিঃসরণ বাড়ায় না, ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতেও ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে শহরের বহুতল ভবন ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোতে এটি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
দেশের আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে কুল রুফ টেকনোলজি হতে পারে ঘর ঠাণ্ডা রাখার একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সমাধান। বাড়তি খরচ ছাড়াই এই প্রযুক্তি এনে দিতে পারে গরমের দিনে একটুখানি স্বস্তি।
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.